এসএসসি পদার্থবিজ্ঞান ৩য় অধ্যায় বল | অনুধাবনমূলক প্রশ্ন | শিক্ষা কেয়ার

এসএসসি পদার্থবিজ্ঞান ৩য় অধ্যায় বল | SSC Physics Chapter 3

গুরুত্বপূর্ণ জ্ঞানমূলক প্রশ্ন

সুপ্রিয় ৯ম/১০ম/এসএসসি পরীক্ষার্থী বন্ধুরা শুভেচ্ছা নিও। নিশ্চয়ই তোমরা সবাই ভাল আছেন। আজকে তোমাদের সাথে পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ৩য় অধ্যায় থেকে গুরুত্বপূর্ণ কিছু অনুধাবনমূলক প্রশ্ন শেয়ার করব। তোমাদের স্কুলের কিংবা এসএসসি পরীক্ষাগুলোতে “এসএসসি পদার্থবিজ্ঞান ৩য় অধ্যায় বল” পোস্টে আলোচিত প্রশ্ন থেকে কমন পড়বে। যদি পোস্টটি তোমাদের উপকারে আসবে এবং যদি পোস্টটি ভাল লাগলে ✉ কমেন্ট এবং????শেয়ার করে আমাদের উৎসাহিত করবেন। নিচে দেওয়া Download লিংকে ক্লিক করে তথ্যটির ✂পিডিএফ ফাইল ডাউনলোড করতে পারবেন। তাহলে চলো পদার্থবিজ্ঞান ৩য় অধ্যায় বল থেকে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি জ্ঞানমূলক প্রশ্ন দেখে নেওয়া যাক…

১. থেমে থাকা বাস হঠাৎ চলতে শুরু করলে বাসযাত্রী পেছনের দিকে হেলে পড়েন কেন?

উত্তর: থেমে থাকা বাস হঠাৎ চলতে শুরু করলে বাসযাত্রী পেছনের দিকে হেলে পড়েন স্থিতি জড়তার জন্য।

বাস যখন স্থির থাকে তখন যাত্রীর শরীরও স্থির থাকে। কিন্তু বাস হঠাৎ চলতে শুরু করলে যাত্রীর শরীরের বাস সংলগ্ন অংশ গতিশীল হয়। কিন্তু শরীরের উপরের অংশ স্থিতি জড়তার জন্য স্থির থাকতে চায়। তাই শরীরের নিচের অংশ থেকে উপরের অংশ পিছিয়ে পড়ে। ফলে যাত্রী পেছনের দিকে হেলে পড়ে।

২. চলন্ত বাস হঠাৎ ব্রেক করলে যাত্রীরা সামনের দিকে ঝুঁকে পড়েন কেন?

উত্তর : চলন্ত বাস হঠাৎ ব্রেক করলে যাত্রীরা সামনের দিকে ঝুঁকে পড়েন গতি জড়তার জন্য।

চলন্ত অবস্থায় বাসের সাথে যাত্রীরাও একই গতি প্রাপ্ত হয়। কিন্তু বাস হঠাৎ থেমে গেলে বাসের সাথে সাথে যাত্রীর শরীরের নিচের অংশ স্থির হয়। কিন্তু শরীরের উপরের অংশ গতি জড়তার জন্য সামনের দিকে এগিয়ে যায়। ফলে যাত্রীরা সামনের দিকে ঝুঁকে পড়ে।

৩. বলের মাত্রা এবং একক নির্ণয় কর।

উত্তর : আমরা জানি বল, বল = ভর × ত্বরণ

\[=ভর\times\frac{বেগ}{সময়}=ভর\times\frac{দূরত্ব}{সময়}\times\frac{১}{সময়}=\frac{ভর\timesদূরত্ব}{সময়^২}\]

⸫ বলের মাত্রা = [MLTˉ²] এবং বলের একক = kgmsˉ²

৪. গাড়ি ব্রেক করার পরও একটু সামনে গিয়ে থামে কেন? সি. বো. ১৯

অথবা, বৈদ্যুতিক পাখার সুইচ বন্ধ করার সাথে সাথে থেমে যায় না কেন? ব্যাখ্যা কর। য.বো. ১৭
উত্তর: গাড়ি ব্রেক করার পরও একটু সামনে গিয়ে থামে গতি জড়তার কারণে।

আমরা জানি, গতিশীল বস্তু সর্বদা তার গতি অবস্থা বজায় রাখতে চায়। এজন্য গাড়ি ব্রেক করার পর সাথে সাথে থেমে না গিয়ে পূর্বগতির কারণে কিছুটা সামনে গিয়ে থামে।

৫. নির্দিষ্ট দিকে সমদ্রুতিতে একই দূরত্বে একটি প্রাইভেট কার ও একটি মালবাহী ট্রাক কোনটি থামানো কষ্টসাধ্য? ব্যাখ্যা কর।   সি. বো. ১৯

উত্তর: নির্দিষ্ট দিকে সমদ্রুতিতে চলমান একটি প্রাইভেট কার ও একটি মালবাহী ট্রাকের মধ্যে একই দূরত্বে মালবাহী ট্রাককে থামানো কষ্টসাধ্য। কারণ- গতিশীল প্রাইভেট কার অপেক্ষা মালবাহী ট্রাকের ভরবেগ বেশি, ফলে এর গতি জড়তাও বেশি। আমরা জানি, পদার্থের জড়তার পরিমাপ হলো ভর অর্থাৎ মালবাহী ট্রাকের ভর বেশি বলে এর গতি জড়তাও বেশি। এর ফলে মালবাহী ট্রাককে থামাতেও বেশি বল প্রয়োগ কতে হবে। অর্থাৎ একই দূরত্বে মালবাহী ট্রাকটি থামানো বেশি কষ্টসাধ্য।

এসএসসি পদার্থবিজ্ঞান ৩য় অধ্যায় বল
৬. নিউটনের দ্বিতীয় সূত্র থেকে কীভাবে প্রথম সূত্র পাওয়া যায়- ব্যাখ্যা কর।

উত্তর: নিউটনের দ্বিতীয় সূত্র হতে আমরা জানি, বস্তুর ভরবেগের পরিবর্তনের হার এর উপর প্রযুক্ত বলের সমানুপাতিক।

অর্থাৎ, F = ma

\[বা,\ 0\ =\ m\ .\frac{v-u}{t}\ \ \left[বাহ্যিক\ বল\ প্রযুক্ত\ না\ হলে,\ F=0\right]\]

\[বা,\ m\left(v-u\right)=0\]

বা, v – u = 0

⸫ v = u

অর্থাৎ বাহ্যিক বল প্রযুক্ত না হলে স্থির বস্তু চিরকাল স্থির থাকবে এবং গতিশীল বস্তু চিরকাল গতিশীল থাকবে। এটিই নিউটনের প্রথম সূত্র।

৭. বস্তুর ভর হচ্ছে জড়তার পরিমাপ – ব্যাখ্যা কর।

উত্তর: ভিন্ন ভরের দুটি বস্তু নিয়ে বস্তুদ্বয়কে স্থির অবস্থা থেকে গতিশীল করতে চাইলে ভারী বস্তুর ক্ষেত্রে বেশি প্রচেষ্টার দরকার হবে। একইভাবে বস্তুদ্বয় যদি গতিশীল থাকে তবে তাদেরকে থামানোর ক্ষেত্রে ভারী বস্তুর ক্ষেত্রে বেশি প্রচেষ্টা করতে হবে। এজন্যই বলা হয় ভর হলো জড়তার পরিমাপক।

৮. বলের ঘাত ভরবেগের পরিবর্তনের সমান- ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: আমরা জানি, প্রযুক্ত বল ও বলের ক্রিয়াকালের গুণফলকে বলের ঘাত বলে।

সুতরাং বলের ঘাত, J = Ft = mat

\[\ =\ m.\ \frac{v-u}{t}.\ t\ \]

= mv – mu

উপরোক্ত সম্পর্ক থেকে স্পষ্টতই প্রতীয়মান হয় যে, বলের ঘাত ভরবেগের পরিবর্তনের সমান।
৯. ভিন্ন ভরের দুটি বস্তুর উপর একই পরিমাণ বল প্রয়োগ করলে তাদের অতিক্রান্ত দূরত্ব সমান হয় না কেন?        ঢা.বো. ২০

উত্তর: আমরা জানি, ত্বরণ

\[a=\frac{F}{m}\]

দেখা যায় যে, ভিন্ন ভরের দুটি বস্তুর উপর একই পরিমাণ বল প্রয়োগ করলে এদের ত্বরণ ভিন্ন হবে। ফলে এদের অতিক্রান্ত দূরত্বও ভিন্ন হবে। এ কারণেই ভিন্ন ভরের দুটি বস্তুর উপর একই পরিমাণ বল প্রয়োগ করলে তাদের অতিক্রান্ত দূরত্ব সমান হয় না।

১০. পাহাড় থেকে নিচে নামা অপেক্ষা পাহাড়ের উপরে উঠা কষ্টকর কেন- বুঝিয়ে লিখ।  রা.বো. ২০
উত্তর: পাহাড় বেয়ে উপরে উঠতে দেহকে অভিকর্ষ বলের বিরুদ্ধে কাজ করতে হয়। ফলে অভিকর্ষ বলের বিপরীতে বল প্রয়োগ করে পাহাড়ে উঠতে হয়। তাছাড়া উপরে উঠার সময় প্রতিনিয়ত আরোহীর মধ্যে বিভব শক্তি জমা হতে থাকে। এ কারণে পাহাড় বেয়ে উপরে উঠতে দেহে বেশি ক্লান্তি লাগে। এ কারণে পাহাড় থেকে নিচে নামা অপেক্ষা পাহাড়ের উপরে উঠা কষ্টকর।
১১. বস্তুর ভরের পরিবর্তন হয় না কিন্তু ওজনের পরিবর্তন হয়- ব্যাখ্যা কর।                   য.বো. ২০; রা.বো. ১৯

উত্তর: ভর বস্তুর মৌলিক বৈশিষ্ট্য; যার কোনো পরিবর্তন হয় না। বস্তুর ওজন অভিকর্ষজ ত্বরণের উপর নির্ভর করে। পৃথিবী সম্পূর্ণ গোলাকার না হওয়ায় এর ব্যাসার্ধ সর্বত্র সমান নয়। মেরু অঞ্চলে পৃথিবীর ব্যাসার্ধ সবচেয়ে কম এবং বিষুবীয় অঞ্চলে সবচেয়ে বেশি। এতে মেরু অঞ্চলে অভিকর্ষজ ত্বরণের মান সবচেয়ে বেশি এবং বিষুব অঞ্চলে সবচেয়ে কম হয়। এজন্য বস্তুর ওজন পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন হয়।

সুতরাং বলা যায়, বস্তুর ভরের পরিবর্তন হয় না কিন্তু ওজনের পরিবর্তন হয়।

১২. ভর ও ওজন একই ধরনের রাশি নয় কেন?

উত্তর: বস্তু মধ্যে পদার্থের পরিমাণ হচ্ছে ভর। এটি একটি ধ্রুব রাশি, এর একক কিলোগ্রাম (kg) এবং এটি স্কেলার রাশি।
কোনো বস্তুকে পৃথিবী যে বল দ্বারা তার কেন্দ্রের দিকে আকর্ষণ করে তাকে বস্তুর ওজন বলে। কোনো বস্তুর ভর m এবং পৃথিবীর কোনো স্থানে অভিকর্ষজ ত্বরণ g হলে ঐ স্থানে বস্তুটির ওজন হবে W = mg; এটি ভেক্টর রাশি এবং এর একক নিউটন (N)। ওজন g এর মানের পরিবর্তনের সাথে পরিবর্তনশীল। এ কারণেই ভর ও ওজন একই ধরনের রাশি নয়।

১৩. কাদাযুক্ত রাস্তায় হাঁটা অসুবিধাজনক কেন?         কু.বো. ২০, ১৯; চ.বো.২০

উত্তর: রাস্তায় হাঁটার সময় রাস্তা ও পায়ের তলার মধ্যে যে ঘর্ষণ বল তৈরি হয় তার জন্য আমরা চলতে পারি। কিন্তু রাস্তা কাদাযুক্ত হলে রাস্তা ও পায়ের তলার মধ্যকার ঘর্ষণ বল হ্রাস পায়। এর ফলে কাদাযুক্ত রাস্তায় আমরা পিছলে যাই। তাই কাদাযুক্ত রাস্তায় হাঁটা অসুবিধাজনক।

এসএসসি পদার্থবিজ্ঞান ৩য় অধ্যায় বল অনুধাবনমূলক প্রশ্ন সমাহার

১৪. ক্রিয়া ও প্রতিক্রিয়া বল সর্বদা ভিন্ন বস্তুর উপর ক্রিয়াশীল – ব্যাখ্যা কর।   ব.বো. ১৯

উত্তর: ক্রিয়া ও প্রতিক্রিয়া সর্বদা ভিন্ন বস্তুর উপর ক্রিয়াশীল।

নিউটনের ৩য় সূত্রানুসারে- একটি বস্তু, অপর একটি বস্তুর উপর বল প্রয়োগ করলে, অপর বস্তুটিও, প্রথমোক্ত বস্তুর উপর সমান ও বিপরীতমুখী বল প্রয়োগ করে। অর্থাৎ, প্রত্যেকটি ক্রিয়ারই একটি সমান ও বিপরীতমুখী প্রতিক্রিয়া আছে। যেমন- আমরা যখন হাটি তখন আমরা মাটির উপর ক্রিয়াবল প্রয়োগ করি। মাটিও সমান ও বিপরীতমুখী প্রতিক্রিয়া বল আমাদের উপর প্রয়োগ করে। ফলে আমরা হাটতে পারি।

অর্থাৎ ক্রিয়া ও প্রতিক্রিয়া দুটি ভিন্ন বস্তুর উপর ক্রিয়াশীল হয়।

১৫. নৌকা থেকে আরোহী লাফ দিলে নৌকা পেছনের দিকে সরে যায় কেন ?

উত্তর: নৌকা থেকে নৌকার আরোহী লাফ দিলে নৌকা পিছনের দিকে ছুটে যায়। কারণ- আরোহী যখন লাফ দেয় তখন নৌকার উপর বল প্রয়োগ করে এবং সামনে এগিয়ে যায়। কিন্তু নৌকা ও আরোহীর ভরবেগের পরিবর্তন পরস্পরের সমান ও বিপরীতমুখী। সেজন্য নৌকা পিছনের দিকে ছুটে যায়।

১৬. জুতার তলায় খাঁজকাটা থাকে কেন?   ম.বো. ২০

উত্তর: জুতার তলায় খাঁজ কাটা থাকলে জুতার তলা উঁচু-নিচু হয়। এর ফলে রাস্তা ও জুতার মধ্যে ঘর্ষণ বল সর্বোচ্চ হয় এবং জুতা রাস্তাকে ভালোভাবে আঁকড়ে ধরে রাখে। ফলে আমরা পিছলে না গিয়ে স্বাভাবিকভাবে হাঁটতে পারি। এজন্য জুতার তলায় খাঁজ কাটা থাকে।

১৭. দেয়ালে পেরেক ঢুকালে আটকে থাকে কেন? ব্যাখ্যা কর।   কু.বো. ১৭
উত্তর: দেয়ালে পেরেক ঢুকালে যদি ঘর্ষণ না থাকতো তাহলে পেরেকটি বের হয়ে আসত অথবা ভিতরে ঢুকে যেত। ঘর্ষণের কারণে দেয়াল ও পেরেকের গতির বিপরীতে একটি বলের উদ্ভব হয় যা পেরেকটিকে আটকে রাখতে সহায়তা করে। সুতরাং বলা যায় যে, দেয়ালে পেরেক ঢুকালে তা আটকে থাকার কারণ হলো ঘর্ষণ।

১৮. রাস্তার মসৃণতায় ঘর্ষণের ভূমিকা ব্যাখ্যা কর।      সি. বো. ১৬

উত্তর: গাড়ির টায়ার এবং রাস্তার মধ্যবর্তী ঘর্ষণ বলের মান টায়ার এবং রাস্তার মসৃণতার উপর নির্ভর করে। রাস্তা বেশি মসৃণ হলে প্রয়োজনীয় প্রতিক্রিয়া বলের সৃষ্টি হয় না এবং ঘর্ষণ বলের মান অত্যধিক কমে যায়। ফলে গাড়ি সামনের দিকে অগ্রসর হয় না। এছাড়া ব্রেক প্রয়োগ করেও গাড়িকে সুনির্দিষ্ট স্থানে থামানো সম্ভব হয় না। এতে বিভিন্ন দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনাও থাকে। এজন্য রাস্তার মসৃণতা এখন হতে হবে যাতে রাস্তা প্রয়োজনীয় ঘর্ষণ বলের যোগান দেয়।

১৯. গাড়ির টায়ারের পৃষ্ঠে খাজ কাটা থাকে কেন- ব্যাখ্যা কর।

উত্তর: গাড়ির টায়ারের পৃষ্ঠে খাঁজ কাঁটা থাকলে টায়ারের পৃষ্ঠ উঁচু নিচু হয়। টায়ারের পৃষ্ঠ উঁচু নিচু থাকার কারণে রাস্তা ও টায়ারের মধ্যে ঘর্ষণ বল সর্বোচ্চ হয়। ফলে টায়ার রাস্তাকে ভালোভাবে আঁকড়ে ধরে রাখে। এজন্য গাড়ির টায়ারের পৃষ্ঠে খাঁজ কাটা থাকে।

২০. ঘর্ষণ একটি প্রয়োজনীয় উপদ্রব- ব্যাখ্যা কর

উত্তর: ঘর্ষণে অনেক অসুবিধা থাকা সত্ত্বেও ঘর্ষণ ছাড়া আমরা কোনো কিছুই করতে পারি না। ঘর্ষণ না থাকলে কোনো গতিশীল বস্তুর গতি শেষ না হয়ে বিরামহীনভাবে চলতে থাকত। ঘর্ষণ আছে বলেই দেয়ালে পেরেক আটকানো সম্ভব হয়েছে। পাকা দালান ও বাড়ি ঘর নির্মাণ করা যাচ্ছে। কাগজে কলম বা পেনসিল দিয়ে লিখা যাচ্ছে। ঘর্ষণের কারণেই মাটিতে হাঁটতে পারছি, গাড়ির গতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারছি, প্যারাস্যুট ব্যবহার করে বিমান থেকে মাটিতে অবতরণ সম্ভব হচ্ছে। এজন্য ঘর্ষণকে প্রয়োজনীয় উপদ্রব বলা হয়।

২১. সাম্য ও অসাম্য বলের মধ্যে পার্থক্য লিখ।   য.বো. ১৯, ১৬

উত্তর: নিচে সাম্য বল ও অসাম্য বলের মধ্যে পার্থক্য উল্লেখ করা হলো-

সাম্য বলঅসাম্য বল
১। লব্ধি শূণ্য হয়।১। লব্ধি শূণ্য হয় না।
২। ত্বরণ হয় না।২। ত্বরণ হতে পারে।
৩। যে বস্তুর উপর ক্রিয়া করে তা স্থির থাকে।৩। যে বস্তুর উপর ক্রিয়া করে তা গতিশীল হয়।
এসএসসি পদার্থবিজ্ঞান ৩য় অধ্যায় বল

২২. বালুতে হাঁটা কষ্টকর কেন?      কু বো ২০

উত্তর: বালুতে প্রতিক্রিয়া কম হয় বলে বালুতে হাঁটা কষ্টকর। হাঁটার সময় আমরা পায়ের সাহায্যে রাস্তার ওপর যে ক্রিয়া করি, রাস্তার পৃষ্ঠ তার প্রতিক্রিয়া ফিরিয়ে দেয়। আমরা পেছন দিকে ক্রিয়া করি ফলে রাস্তার প্রতিক্রিয়া আমাদের সামনে ঠেলে দেয়। বালুর কণাগুলো সরণের মাধ্যমে আমাদের প্রযুক্ত বলকে কাজে রূপান্তরিত করে ফেলে। পিচের রাস্তার মতো প্রতিক্রিয়া দেয় না। এই কারণে বালুতে হাঁটা কষ্টকর।

২৩. একই উচ্চতার ছাদ থেকে ফেলে দেওয়া একই ভরের ১টি খোলা কাগজের তুলনায় ১টি মোচড়ানো কাগজ ভূমিতে আগে পৌঁছায় কেন?      ঢা. বো. ১৯

উত্তর: বাতাসের বাধার কারণে মোচড়ানো কাগজ খোলা কাগজের চেয়ে ভূমিতে আগে পৌঁছায়। যদিও পড়ন্ত বস্তুর সূত্র অনুসারে দুটি বস্তু একই সময়ে একই দূরত্ব অতিক্রম করে, এটি বস্তুদ্বয়ের ভরের উপর নির্ভর করে না। কিন্তু এটি বায়ুশূন্য স্থানের জন্য প্রযোজ্য। বাস্তবে এটি ঘটে না।

বাস্তবে যে বস্তু যত বেশি বায়ুর ঊর্ধ্বমুখী বাধা পায়, সে বস্তু তত বেশি ধীরে ভূমিতে পৌঁছায়। যে বস্তু বেশি ছড়ানো থাকে অর্থাৎ ক্ষেত্রফল বেশি সে তত বেশি এ বাধার সম্মুখীন হয়। একটি খোলা কাগজ একটি মোচড়ানো কাগজের ভুলনায় অনেক বেশি বাঁধার সম্মুখীন হয় (যেহেতু ক্ষেত্রফল বেশি)। তাই মোচড়ানো কাগজ খোলা কাগজের তুলনায় ভূমিতে আগে পৌঁছায়।

২৪. 50N বল বলতে কী বুঝ?      চ.বো ১৯

উত্তর: 50N বল বলতে সেই পরিমাণ বলকে বোঝায় যে পরিমাণ বল 1kg ভরের বস্তুর উপর ক্রিয়া করে 50msˉ² ত্বরণ সৃষ্টি করতে পারে।

২৫. জড়তা বলতে কী বুঝায়? ব্যাখ্যা কর।   ঢা.বো ১৫

উত্তর: বস্তু যে অবস্থায় আছে চিরকাল সে অবস্থায় থাকতে চাওয়ার যে প্রবণতা তাকে জড়তা বলে। গতিশীল বস্তু চিরকাল গতিশীল থাকতে চায় এবং স্থিতিশীল বস্তু চিরকাল স্থির অবস্থায় থাকতে চায়। এই ধর্মই হল জড়তা।

২৬. প্যাচযুক্ত পানির কল যা ঘুরিয়ে খুলতে হয়, সাবানযুক্ত ভেজা হাতে তা খোলা কষ্টকর কেন?                        দি.বো. ১৭

উত্তর: সাবান একটি পিচ্ছিলকারী পদার্থ। সাবানযুক্ত ভেজা হাতের সাথে প্যাঁচযুক্ত পানির কলের মধ্যকার ঘর্ষণের পরিমাণ অনেকাংশে কমে যায়। এ সময় পানির কল ও সাবানযুক্ত ভেজা হাতের মধ্যে পিছলানো ঘর্ষণ বা বিসর্প ঘর্ষণে উদ্ভব হয়। কম ঘর্ষণ বলের জন্য তখন প্যাচযুক্ত পানির কল সাবানযুক্ত ভেজা হাতে ঘুরিয়ে খোলা কষ্টকর হয়ে দাঁড়ায়।

২৭. পৃথিবীর কেন্দ্রে বস্তুর ওজন শূন্য কেন?   দি বো. ১৬

উত্তর: বস্তুর ওজন অভিকর্ষজ ত্বরণ g এর ওপর নির্ভর করে। যেসকল কারণে অভিকর্ষজ ত্বরণের পরিবর্তন ঘটে সেসকল কারণে বস্তুর ওজন পরিবর্তিত হয়। বস্তুর ওজন, W = mg

অভিকর্ষজ ত্বরণ g-এর মান পৃথিবীর ব্যাসার্ধ এর উপর নির্ভর করে। পৃথিবীর কেন্দ্রে পৃথিবীর ব্যাসার্ধ শূন্য বলে অভিকর্ষজ ত্বরণ g-এর মান শূন্য হবে। তাই পৃথিবীর কেন্দ্রে বস্তুর ওজনও শূন্য।

২৮. বন্দুক থেকে গুলি ছোড়া হলে কোনো ব্যক্তি পেছনের দিকে ধারা অনুভব করে কেন?

উত্তর: নিউটনের গতির তৃতীয় সূত্রানুসারে, প্রত্যেক ক্রিয়ারই একটি সমান ও বিপরীতমুখী প্রতিক্রিয়া আছে। বন্দুক থেকে যখন গুলি ছোড়া হয় তখন এর উপর প্রযুক্ত বল সামনের দিকে ক্রিয়া করে। গুলির এই ক্রিয়ার বিপরীতে পেছনের দিকে বন্দুকের উপর সমান প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। বন্দুকের উপর এ বিপরীতমুখী প্রতিক্রিয়ার কারণে বন্দুক থেকে গুলি ছোড়া হলে কোনো ব্যক্তি পেছনের দিকে ধাক্কা অনুভব করে।

এসএসসি পদার্থবিজ্ঞান ৩য় অধ্যায় বল

২৯. গতির উপর ঘর্ষণের প্রভাব ব্যাখ্যা কর।

উত্তর: গতির উপর ঘর্ষণের ব্যাপক প্রভাব রয়েছে। ঘর্ষণ হলো বাধাদানকারী বল যা বস্তুর গতির বিরুদ্ধে ক্রিয়া করে এবং বস্তুর গতিকে মন্থর করে। ঘর্ষণ আমাদের দৈনন্দিন জীবনে সমস্যা তৈরি করলেও চলাচল ও যানবাহন চালনার জন্য গতির ওপর ঘর্ষণ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। রাস্তা ও টায়ারের পৃষ্ঠ প্রয়োজনমতো অমসৃণ করা হয় যাতে গাড়ি সামনের দিকে এগিয়ে যেতে পারে। গতি নিয়ন্ত্রণে যে ব্রেক ব্যবহার করা হয় তা ঘর্ষণের নীতির উপর কাজ করে।

৩০. ঘর্ষণ বলের কারণে আরোহী প্যারাসুট ব্যবহার করে মাটিতে নেমে আসতে পারে– ব্যাখ্যা কর

উত্তর: প্যারাসুট বায়ুর বাধাকে কাজে লাগিয়ে কাজ করে। এখানে বায়ুর বাধা হলো এক ধরনের ঘর্ষণ বল যা পৃথিবীর অভিকর্ষ বলের বিপরীতে ক্রিয়া করে। খোলা অবস্থায় প্যারাসুটের বাহিরের তলের ক্ষেত্রফল অনেক বেশি হওয়ায় বায়ুর বাধার পরিমাণও বেশি হয়, যার ফলে আরোহীর পতনের গতি অনেক হ্রাস পায়। ফলে আরোহী ধীরে ধীরে মাটিতে নিরাপদে নেমে আসে।

৩০. ঘর্ষণ বলের কারণে আরোহী প্যারাসুট ব্যবহার করে মাটিতে নেমে আসতে পারে– ব্যাখ্যা কর

উত্তর: প্যারাসুট বায়ুর বাধাকে কাজে লাগিয়ে কাজ করে। এখানে বায়ুর বাধা হলো এক ধরনের ঘর্ষণ বল যা পৃথিবীর অভিকর্ষ বলের বিপরীতে ক্রিয়া করে। খোলা অবস্থায় প্যারাসুটের বাহিরের তলের ক্ষেত্রফল অনেক বেশি হওয়ায় বায়ুর বাধার পরিমাণও বেশি হয়, যার ফলে আরোহীর পতনের গতি অনেক হ্রাস পায়। ফলে আরোহী ধীরে ধীরে মাটিতে নিরাপদে নেমে আসে।

৩১. তোমার ওজন পৃথিবীর সকল দেশেই সমান হবে কি? ব্যাখ্যা কর।    দি.বো. ১৫ 

উত্তর: পৃথিবীর সকল দেশে আমার ওজন সমান হবে না। বস্তুর ওজন অভিকর্ষজ ত্বরণ g এর ওপর নির্ভর করে। যেসকল কারণে অভিকর্ষজ ত্বরণের পরিবর্তন ঘটে সেসকল কারণে বস্তুর ওজনও পরিবর্তিত হয়। আবার, অভিকর্ষজ ত্বরণ g এর মান পৃথিবীর ব্যাসার্ধ R এর উপর নির্ভর করে। পৃথিবী সুষম গোলক নয় এবং ভূ-পৃষ্ঠের সর্বত্র পৃথিবীর ব্যাসার্ধ R-এর মান সমান নয়; তাই অভিকর্ষজ ত্বরণের মানও এক নয়। ফলে পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে ওজনও এক নয়।

তাই আমার ওজন পৃথিবীর সকল দেশেই সমান হবে না।

৩২. কাদাযুক্ত রাস্তায় আমরা পিছলে যাই কেন, ব্যাখ্যা কর।

উত্তর:  রাস্তায় হাঁটার সময় রাস্তা ও পায়ের তলার মধ্যে যে ঘর্ষণ বল তৈরি হয় তার জন্য আমরা চলতে পারি। কিন্তু রাস্তা কাদাযুক্ত হলে রাস্তার ও পায়ের তলার মধ্যকার ঘর্ষণ বল হ্রাস পায়। এর ফলে কাদাযুক্ত রাস্তায় আমরা পিছলে যাই।

৩৩. ঘর্ষণ বল কেন উৎপন্ন হয়?

উত্তর: ঘর্ষণ হলো যে কোনো দু’টি তলের অনিয়মিত প্রকৃতির ফল। প্রত্যেক বস্তুরই তল আছে। আবার তল মসৃণ অথবা অমসৃণ দুই হতে পারে। আপাত দৃষ্টিতে কোনো বস্তুর তলকে মসৃণ বলে মনে হলেও অনুবীক্ষণ যন্ত্রের সাহায্যে দেখলে এর উপর অনেক উঁচু নিচু খাঁজ লক্ষ করা যায়। যখন একটি বস্তু অন্য একটি বস্তুর উপর দিয়ে গতিশীল হয়, তখন উভয় বস্তুর স্পর্শতলের এ খাঁজগুলো একটির ভিতর আরেকটি ঢুকে যায়। অর্থাৎ খাঁজগুলো পরস্পর আটকে যায়। যার ফলে একটি তলের উপর দিয়ে অপর তলের গতি বাধাপ্রাপ্ত হয়। এভাবে ঘর্ষণ বলের সৃষ্টি হয়।

৩৪. কোনো বস্তুর উপর বলের ঘাত 20Ns বলতে কী বুঝ?
উত্তর: কোনো বস্তুর উপর বলের ঘাত 20Ns বলতে বোঝায়- বস্তুটির উপর 1s সেকেন্ট সময় ধরে বস্তুটির উপর 20N বল প্রযুক্ত হয়েছে।

৩৫. রকেট কীভাবে চলে- ব্যাখ্যা কর।

উত্তর: রকেটের গতিকে নিউটনের গতির ৩য় সূত্র বা ভরবেগের সংরক্ষণ সূত্র দ্বারা ব্যাখ্যা করা যায়। রকেটের দহন কক্ষে উপন্ন গ্যাস রকেটের পশ্চাৎভাগে অবস্থিত ছিদ্র দিয়ে প্রচন্ড গতিতে বের হয়ে যায়। গ্যাসের বের হওয়াকে ক্রিয়া বলে। এই ক্রিয়ারই বিপরীত প্রতিক্রিয়ার ফলে রকেট প্রচন্ড গতিতে উপরের দিকে উঠে যায়।


এসএসসি পদার্থবিজ্ঞান ৩য় অধ্যায় বল | গুরুত্বপূর্ণ অনুধাবনমূলক প্রশ্ন পোস্টটি যদি তোমাদের উপকারে আসে এবং যদি পোস্টটি ভাল লাগলে ✉ কমেন্ট এবং????শেয়ার করে আমাদের উৎসাহিত করবেন।


শিক্ষামূলক সকল খবর সবার আগে পেতে চোখ রাখুন ShikkhaCare ওয়েবসাইটে।

শিক্ষামূলক ভিডিও মিস করতে না চাইলে এখনই “E Shikkha” ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করে নিন।

Leave a Comment

error: Content is protected !!